মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৯ অপরাহ্ন
বশির আল মামুন, চট্টগ্রাম:
মুজিববর্ষ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ ঘোষিত দেশের একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র রক্ষায় আটটি পয়েন্টে স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। আগামী এপ্রিল মাসে শুরু হচ্ছে প্রজনন মৌসুম। এ জন্যে অবৈধ জাল পেতে মা মাছ নিধন রোধ, ইঞ্জিন চালিত নৌকা চালাচল বন্ধ, বালু উত্তোলন বন্ধ ও ডলফিন রক্ষায় হালদা নদীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।
সদরঘাট নৌ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এবিএম মিজানুর রহমান বলেন, ‘আটটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন (পিটি জেড, ৩৬০ ডিগ্রী, ২ কিলোমিটার জুম) ক্যামেরার মাধ্যমে মদুনাঘাট থেকে আমতোয়া পর্যন্ত মনিটরিং করা হচ্ছে। এসব সিসি ক্যামেরা ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্নস্থান থেকে সম্মার্টফোন এবং একাধিক ডিভাইস দ্বারা মনিটরিং করা হচ্ছে।’ এছাড়া সম্প্রতি সদরঘাট নৌ থানার আওতায় হাটহাজারী উপজেলার রাম দাশ মুন্সির হাটে স্থাপন করা হয়েছে অস্থায়ী নৌ-পুলিশ ক্যাম্প।
সিসি ক্যামেরায় অসঙ্গতি দেখা দিলেই ছুটে যাচ্ছেন নৌ-পুলিশ ক্যাম্পের আট পুলিশ সদস্য।গত বৃহস্পতিবার সিসি ক্যামেরায় অবৈধ জালপাতার দৃশ্য দেখে অভিযানে গিয়ে বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ৭ হাজার মিটার অবৈধ ঘের জাল জব্দ করা হয়েছে।
ওসি এবিএম মিজানুর রহমান বলেন,‘ডলফিন হত্যা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিল উচ্চ আদালত। এরপর থেকে আমরা হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছি। আগামী এপ্রিল মাসে প্রাকৃতিক প্রজননের মাস শুরু হবে। মা-মাছের যাতে ক্ষতি না হয়, স্বাভাবিকভাবে ডিম ছাড়তে পারে সেটি নিশ্চিত করার জন্যে কাজ করছি।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির কো-অর্ডিনেটর ড. মনজুরুল কিবরিয়া ‘প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে হালদা নদীর জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও নৌ-থানা ক্যাম্প স্থাপনের মাধ্যমে টহল জোরদার ও এবং মনিটরিং করার উদ্যোগ প্রশংসনীয়। বঙ্গবন্ধু হেরিটেজ ঘোষিত হালদা নদী আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষা করা আমাদের সবার দায়িত্ব। তাই হালদা পাড়ের বাসিন্দাদের সচেতন হওয়ার আহবান জানাই।’পাশাপাশি তিনি হালদা নদীর পুরো প্রাকৃতিক প্রজনন এলাকায় সিসি ক্যামেরা স্থাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানিয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, গত বছর দেশের রুই জাতীয় মাছের একমাত্র প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদায় ডিম সংগ্রহে গত ১৪ বছরের রেকর্ড ভাঙা হয়। গত এক দশকের বেশি সময়ের মধ্যে গেল বছর সর্বোচ্চ সংখ্যক ডিম সংগ্রহ করেছিলেন সংগ্রহকারীরা। পরিমাণ ছিল ২৫ হাজার ৫৩৬ কেজি। ২০২১ সালে হালদা নদীতে গাঙ্গেয় ডলফিনের মৃত্যু না হলেও ২০২০সাল পর্যন্ত ২৮টি ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে।
ভয়েস/আআ